যখন আমরা নীতির কথা বলি, তখন সাধারনত আরা একটি ব্যাক্তির বা সংঘটনের মনোভাব, বিশ্বাস, অভ্যাস বা মুল্যয়নের কথা বলে থাকি। নীতি প্রকৃতপক্ষে মূল্যবোধের পর্যবেক্ষণ। ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে এই নীতি ব্যাক্তির, সমাজের ও বিশ্বের সমস্যার মৌলিক উপাদান। সহজ ভাষায়, তা হলো কম্পিউটারের ব্যবহার কেন্দ্রিক মৌলিক উপাদানের তালিকা। একজন ব্যাক্তি বা সংগঠনের কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে যা কিছু গ্রহণযোগ্য আচরন, সেই সমস্ত মৌলিক উপাদান হলো এই ইন্টারনেট নীতি। যেমন আমরা সকলে জানি যে কম্পিউটার একটি প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি এবং তা নীতি সংক্রান্ত ঘটনার সাথে জরিত, যেমন ব্যাক্তির অনুপ্রবেশ, প্রতারণা, গোপনীয়তা খণ্ডন, সাইবার তর্জন, সাইবার চর, অপপ্রচার, ছলনাকর প্রযুক্তি বা সামাজিক দায়বদ্ধতা আর বুদ্ধিদীপ্ত সম্পত্তির অধিকার অর্থাৎ ইলেকট্রনিক সম্পত্তির সত্ব।

সকলের জন্য ইন্টারনেট নীতি

গ্রহণযোগ্যতা

একজনের এটা জানা আবশ্যক যে ইন্টারনেট কোন মুল্যবিহিন ক্ষেত্র নয়। এর মানে এই যে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব একটি ক্ষেত্র যেখানে নীতিকে সব থেকে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেহেতু আমরা যখন কোন জিনিস বা পরিসেবা প্রস্তুত করি, সেটার ব্যাপারে যথেষ্ট সৃজনশীল হওয়া আবশ্যক। আমাদের এটা বোঝা উচিত যে ইন্টারনেট কোন জগত সভ্যতার বাইরের জিনিস নয়, উপরন্তু তার একটি বিশেষ অংশ।

জাতীয় ও অন্তর্বর্তী সংস্কৃতির সংবেদনশীলতা

ইন্টারনেট সকলের জন্য, তাই এখানে কোন প্রাদেশিক বা জাতীয় সংস্কৃতির বন্ধন নেই। এটা কখনই একটি স্থানিয় টিভি চ্যানেল বা স্থানিয় সংবাদ পত্রের মত কোন একটি নিয়ম মেনে চলতে পারেনা, আমাদের বিভিন্ন ব্যবহারিকতা এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়।

যখন এমেল বা চ্যাটিং করা হয়

বন্ধু পরিজনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেতে পারে। অপরিচিত ব্যাক্তির সাথে গল্পগুজব বা তাদের মেল অন্যকে পাঠানো থেকে দূরে থাকুন। এই ক্ষেত্রে যা যা অঘটন ঘটতে পারে, সেই সম্বন্ধে সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত।

ছদ্মবেশ ধারন করা

অন্যের ভুমিকায় নিজে থেকে ছদ্মবেশ ধরে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কারুকে বোকা বানানো উচিত নয়। নিজের পরিচয় গোপন রেখে অন্যকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বোকা বানানো একটি অপরাধ এবং তা করে অন্যের জন্য আপনি বিপদের কারন হতে পারেন।  

কুশব্দ প্রয়োগ বন্ধ করুন

এমেলে, চ্যাটে, ব্লগে বা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আমরা বাজে বা যাচ্ছেতাই ভাষা প্রয়োগ করতে পারিনা, আমাদের উচিত অন্যের মতবাদ কে সম্মান করা, এবং কারুকে দুচ্ছাই না করা।

ব্যাক্তিগত তথ্য গোপন করা

আমরা কারুকে ব্যাক্তিগত তথ্য যেমন বাড়ির ঠিকানা, ফোন নম্বর, আমাদের ভালোলাগা নালাগা, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি কারুকে দিতে পারিনা। অপরিচিত ব্যাক্তিকে কোন ছবি না দেওয়া উচিত, কারন তার অপব্যবহার হতে পারে।

ডাউনলোড করার সময়ে

ভিডিও দেখতে, গেম খেলতে, ব্রাউস করতে বা তথ্য ডাউনলোড করতেও ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। সেই ক্ষেত্রে স্বত্ব ও সত্বাধীন নিয়মাবলি জানা আবশ্যক।

ইন্টারনেটের অধিগমন

ইন্টারনেট সকলের জন্য একটি সময়সাপেক্ষ যন্ত্রাংশ যা পাঠক্রম সমৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। শেখা নির্ভর করে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য সহজ ও চটজলদি খুঁজে নেবার ক্ষমতার উপর, আর তার সাথে নির্ভর করে সেই সংগৃহীত তথ্যের বাছাই, উপলব্ধি ও মুল্যয়নের উপরও। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেই সমস্ত তথ্য খোঁজার অভ্যাস এই সকল গুণাবলিকে সমৃদ্ধ করে তোলে। ক্লাসরুম অভিজ্ঞতা আর গৃহে নিয়ে যাওয়া কাজের মাধ্যমে, যেখানে ছাত্রকে ওয়েবসাইটের তথ্য মেলাতে হয়, একটি ছাত্রকে বিভিন্ন শ্রতাদের কাছে পৌঁছান, গ্রহণযোগ্যতা এবং নিখুঁত হবার প্রচেষ্টা সতর্ক করে দেবার জন্য পর্যাপ্ত। যেহেতু বিভিন্ন ইন্টারনেটের সাইট একটি বস্তুর উপর বিভিন্ন ভাবে আলকপাত করে থাকে, সেহেতু কোন জিনিসের সম্বন্ধে বিস্তৃত ভাবে জানতে ও বুঝতে, ইন্টারনেট খুবই প্রয়োজনীয়।

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নৈতিকতা

কম্পিউটার ব্যবহার করার সময়ে একজন ব্যাক্তির যে সমস্ত নিয়ম মেনে চলা উচিত, তা নীচে বলা হল 

  • অন্যের ক্ষতি করার জন্য ইন্টারনেটের ব্যবহার করবেন না।
  •  অন্যের তথ্য চুরি করতে ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন না।
  •  কোন ফাইল সেই ফাইলের যিনি অধিকারী, তার অমতে ব্যবহার করবেন না।
  •  কোন সত্বাধীন সফটওয়্যার তার নির্মাতার অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। 
  • সব সময়ে স্বত্ব সংক্রান্ত আইন ও নীতি মেনে চলুন।
  •  অন্যের গোপনীয়তাকে সম্মান করুন, যেমনটা আপনি নিজের ক্ষেত্রে আশা করেন। 
  •  যদি কোন বেয়াইনি বাক্যালাপ দেখেন, তাহলে যিনি ইন্টারনেটের সুবিধা দিচ্ছেন বা স্থানিয় আধিকারিককে সেই ব্যাপারে অভিযোগ জানান। 
  •  একজন ব্যবহারকারী নিজের আইডি বা পাসওয়ার্ড সব সময়ে রাখবে, মনে রেখে দেবার জন্য কোন কাগজ বা অন্যত্র তা লিখে রাখবে না। 
  •  স্বেচ্ছায় কম্পিউটার ব্যবহার করে অন্যের মুল্যবান তথ্য যেমন ফাইল বা পাসওয়ার্ড পাল্টানো উচিত নয়। 
Page Rating (Votes : 3)
Your rating: